বহুব্রীহি সমাস
যে সমাসে সমস্যমান পদ দুটির কোনটির অর্থ না বুঝিয়ে অন্য কোনো অর্থ বোঝায়, তাকে বহুব্রীহি সমাস বলে। যেমন,
বীণাপাণি→বীনা পানিতে যার।
এখানে বীনা (বাঁশি) ও পাণি (হাত) কোনটাই না বুঝিয়ে দেবী সরস্বতী কে বোঝানো হয়েছে। এ সমাসে যে, যার, যাতে ইত্যাদি ব্যাসবাক্যে ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণঃ
অল্পপ্রাণ→ অল্প প্রাণ যার
আশীবিষ→ আশিতে বিশ যার
একচোখা→ একদিকে চোখ যার
উর্ণনাভ→ উর্ণা নাভিতে যার
মন্দভাগ্য→ মন্দভাগ্য যার
কমবখত কম বখত যার
ক্ষরধারা→ ক্ষরের ধারা যার
তিমিরকুন্ডালা→ তিমিরের ন্যায় কুন্ডল যার
গল্পপ্রেমিক→ গল্পে প্রেম যার
চন্দ্রচুড়→ চন্দ্র চুড়ায় যার
দশানন→ দশ আনন যার
গায়েহলুদ→ গায়ে হলুদ দেয়া হয় যে অনুষ্ঠানে
দোভাষী→ দো ভাষা আয়াত্তে যার
নদীমাতৃক→ নদী মাতা যার
নীলকন্ঠ→ নীর কন্ঠ যার
পর্দাপ্রিয়→ পর্দা প্রিয় যার
বিপত্নীক→ বি পত্নী যার
বিমনা→ বিচলিত মন যার
সতীর্থ→ সমান তীর্থ যাদের
সহোদর→ সমান উদর যাদের
সুহৃদ→ সুন্দর হৃদয় যার
শৌখিন→ শখ আছে যার
স্বল্পপ্রাণ→ স্বল্প প্রাণ যার
সদর্প→ দর্পের সঙ্গে বর্তমান
বহুব্রীহি সমাসের শ্রেণিবিভাগ
বহুব্রীহি সমাস দুই প্রকার। যথা-
- ব্যাতিহারব বহুব্রীহি সমাস
- নঞর্থক বহুব্রীহি সমাস
ব্যাতিহার বহুব্রীহি সমাস
যে বহুব্রীহি সমাসে দুটি একরূপ শব্দ দিয়ে এক জাতীয় কাজ বোঝায় তাকে ব্যাতিহার বহুব্রীহি সমাস বলে। এ সমাসে পূর্বপদে 'আ' এবং পরপদে 'ই' যুক্ত হয়।
উদাহরণঃ
হাতাহাতি→ হাতে হাতে যে লড়াই
কানাকানি→ কানে কানে যে কথা
কোলাকোলি→ কোলে কোলে যে মিলন
গলাগলি→ গলায় গলায় যে মিলন
রক্তারক্তি→ রক্তপাত করে যে যুদ্ধ
লাঠালাঠি→লাঠিতে লাঠিতে যে লড়াই
হাসাহাসি→হাসিতে হাসিতে যে ক্রিয়া
নঞর্থক বহুব্রীহি সমাস
নঞর্থক অব্যয পদের সঙ্গে বিশেষ্য পদের যে বহুব্রীহি সমাস হয় তাকে নঞর্থক বহুব্রীহি সমাস বলে। এ সমাসে ব্যাসবাক্যের পূর্বে 'নয়', 'নেই' ইত্যাদি পদ ব্যবহৃত হয়।
উদাহরণঃ
বেওয়ারিশ→ নেই ওয়ারিশ যার
অনার্শ্রিত→ নেই আশ্রয় যার
অনৈক্য→ নেই অক্য যার
বেহায়া→ নেই হায়া যার
বেতার→ নেই তার যার
নিরর্থক→ নেই অর্থ যাতে
অবিশ্বাস্য→ নয় বিশ্বাসযোগ্য যা
অনভিজ্ঞ→ নয় অভিজ্ঞ যে
নিরক্ষর→ নেই অক্ষরজ্ঞান যার